শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৯ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় করোনাকালে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। অস্ত্রধারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে এলাকাবাসী আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রানঘাতী করোনাভাইরাসের সময়ে ও মানুষ মারামারী গোলাগুলী ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন। এ উপজেলায় গত এক মাসে তিনটি হত্যাকান্ড ও ২ ডজন সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক কালে সংঘর্ষের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়াতে সচেতন মহলের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, মে মাসে দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন ঘোষণা করলে জগন্নাথপুর উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামাজিক দুরত্ব বজায় ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে সচেতনতা সৃষ্টিতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। তারপরও গত এক মাসে তিনটি হত্যাকান্ড ও কমপক্ষে দুই ডজন সংঘর্ষের ঘটনায় দুই শতাধিক লোক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মধুসূদন ধর এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বৈশ্বিক এমন দূর্যোগময় পরিস্থিতিতে দেশীবিদেশী অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদেরকে হিমশিম খেতে হয়। গত মে মাসে ৩৮৫ জন জখমী রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। একাধিক সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত ৪৩ জনকে সিলেটে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরপার আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে মারামারির ঘটনা করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি আরও বাড়াবে। এখনই সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা উচিৎ।
জগন্নাথপুর থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, গত এক মাসে থানায় দুটি হত্যা মামলাসহ ২৪টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সবকটি মামলা হয় সংঘর্ষের ঘটনায়। এসব মামলায় অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম বলেন, করোনাকালে সংঘর্ষে এরকম হতা হতের ঘটনা দুঃখ জনক। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তারপরও লোকজন অসচেতন ভাবে এসবে জড়িয়ে করোনা ঝুঁকি বাড়াচ্ছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মে কলকলিয়া ইউনিয়নের নাদামপুর গ্রামে দুই সতীনের ঝগড়া থামাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ( ভাসুর) বড় ভাই রোয়াব আলী (৪৫)।
এর আগে গত ১৬ মে উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের আটঘর গ্রামে আমপাড়া কে কেন্দ্র করে হামলায় সাদিকুর রহমান (৫০) নিহত হন। গত ২৩ মে উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের মিলিক গ্রামে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় তখলিছ মিয়া (৫৮) নামে এক ব্যক্তি খুনের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি উপজেলার মুহাম্মদ পুর গ্রামে ২ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে বন্দুকের গুলিতে ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন গুরুতর আহত হন। পুলিশ এখন ও অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। অপরাধীরা গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকা বাসীর মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। এছাড়াও কমপক্ষে ২৪ টি সংঘর্ষের ঘটনায় দুই শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
Leave a Reply